Kulottokolai - overnight soaked horsegram seeds water
আমি যা দেখেছি আমার বাবা-মা খাঁটি বাঙাল, দেশ ভাগ হবার সময় বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসা বাঙালিদের সাধারণ পরিচয় হলো তারা বাঙাল । খাবার পছন্দ এবং রান্নার অভ্যাসের কারণে সব থেকে বেশি আলোচনার বিষয় এটা তুমি কি "বাঙাল না ঘটি ", ঘটি মানে যাদের আগে থেকেই পশ্চিমবঙ্গে বসবাস । কিন্তু আমার বাবা মা খুব আহ্লাদের সঙ্গে এদেশীয় মানে অবিভক্ত বাংলার পশ্চিম অংশের ঘটিদের [যা এখন পশ্চিমবঙ্গ] ভাল খাদ্যাভ্যাসকে গ্রহণ করেছিলেন ।
কঠোর নাস্তিক মনোভাবাপন্ন হলেও শীতল ষষ্ঠী পূজোর গোটা সেদ্ধর মতো কিছু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাবার শুধু মাত্র ঋতুর মূল খাবার হিসাবে আমাদের বাড়িতে হবেই এমনটাই নিশ্চিত ছিল । পুজোর বাজার বাদ দিয়ে বাজারে নির্দিষ্ট পুজোর দিনগুলোতে শাক, সবজি, ফল, মূল, মাছ যা পাওয়া যেত সেগুলো ব্যাগ ভর্তি করে নিয়ে হাজির হতেন বাবা আর নিখুঁত বাঙালিয়ানায় রান্নাটা সেরে ফেলতেন আমার মা ।
আমার বাবা সাধারণত শনিবার করে রাতে কুলোত্তোকলাই এবং সবুজ গোটা মুগ ডাল ভিজিয়ে রাখতেন এবং আমাদের রবিবারের জলখাবারে বড় এক বাটি গোটা সেদ্ধ এবং লাল চালের গলা ভাত [আউশ বা গোবিন্দভোগ ] এবং প্রতিবার আমার বাবা তাদের দেশের বাড়ির ঢেঁকি ছাটা চালের স্বাদ-এর গল্পের পুনরাবৃত্তি করতেন ।
প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই যে সবসময় ভালো এতো সবাই জানে । আমি এখনও মনে করতে পারি স্কুলের দিনগুলিতে আমার সাধারণ বাথরুমে যেতে অনিচ্ছার কারণে, আমার মা আমার স্বাস্থ্য সম্পর্কে আমার রেনাল ফাংশন সুস্থ রাখতে এতটাই উদ্বিগ্ন ছিলেন যে তিনি ছুটির দিনগুলোর আগের রাতে কুলোথো ভিজিয়ে রাখতেন এবং সকালে ডাল গুলো ছেঁকে জলটা আমাকে খালি পেটে খেতে দিতেন । বলাই বাহুল্য বাকি মুঠো ভিজানো ডাল সেদিনের রান্নার তরকারি বা ডালে দিয়ে দিতেন ।
কুলোত্তকলাই ডালে একদম কচি নতুন ছোট ছোট সবজি সেদ্ধ - ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার
বাংলায় শীতল ষষ্ঠী পূজা [শীতল মানে ঠান্ডা এবং ষষ্ঠী মানে ৬ষ্ঠ দিন] মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের ৬ষ্ঠ দিনে শুক্লা পঞ্চমী বা সরস্বতী পুজোর পরদিন পালন করা হয়। প্রথাগতভাবে গোটা সেদ্ধ নামে পরিচিত ডালে রান্না করা গোটা শাকসবজির একটি বিশেষ রান্না [সাধারণত পাঁচটি বিভিন্ন ধরনের সবজি এবং প্রতিটিতে ছয় সংখ্যক থাকে] যা পূজার আগের দিন "পঞ্চমীর দিন" সরস্বতীর পুজোর সন্ধ্যায় রান্না করা হয়। পূজার পরের দিন ঠাণ্ডা বা শীতল হলে খাবার পরিবেশন করা হয়। তাই এই নাম । এই আচারটি প্রধানত বাঙালি মায়েরা তাদের সন্তানদের দীর্ঘ ও সুস্থ জীবনের জন্য সেরা নতুন সবজি রান্না করে পালন করে থাকে।
উপাদান - কি কি লাগবে :
প্রায় প্রতিটি বাঙালি পরিবারেরই গোটা সেদ্ধ তৈরির নিজস্ব সংস্করণ রয়েছে, যেমন আমার মায়ের তার নিজের পছন্দের সবজিগুলির সাথে কখনো আপস করতে পারেন নি, যার তালিকা হলো একটি বড় মুঠো কুলথির সাথে গোটা সবুজ মুগ, টোপা কুল, সজনে ডাটা, সাদা শীম, নতুন ছোট আলু, কুলি বেগুন - ছোটো ছোট বেগুন আর কি , কাঁচা মানে সবুজ টমেটো, গাটি কচু, কচি গোটা কড়াইশুটি - না ছাড়িয়ে এবং সৈন্ধব লবন | সব এক সাথে শুধু সেদ্ধ একটু কাঁচা সর্ষের তেল আর গোটা কাঁচা লঙ্কা দিয়ে । আশেপাশের প্রতিবেশীদের বাড়িতে এক বাটি গোটা সেদ্ধ বিনিময় মানে সেও তাদের বানানো এক বাটি দেবে - এটা একটা বাঙালির সামাজিকতা বজায় রাখার ও একটা অঙ্গ বলা চলে।কি ভাবে বানাবেন - পদ্ধতি :
রান্নার কমপক্ষে ৬ঘন্টা আগে পরিষ্কার এবং পর্যাপ্ত জলে ডাল ধুয়ে ফেলুন এবং ভিজিয়ে রাখুন। ভেজানোর জল ফেলে দেবেন না। ডাল সিদ্ধ করে একে একে সব সবজি দিন। যে সবজিগুলো ভালোভাবে রান্না করতে বেশি সময় লাগে সেগুলো আগে দেবেন, এই ভাবে পর পর দিতে থাকুন । মাঝারি আঁচে প্রায় ২০-৩০ মিনিট রান্না করুন। ডাল এবং সবজি ভালোভাবে সিদ্ধ হওয়া উচিত ( সবজি সেদ্ধ হবে কিন্তু পুরোপুরি গলে যাবে না ) । আঁচ বন্ধ করুন এবং এর উপর ১ টেবিল চামচ কাঁচা সরিষার তেল দিন আর গোটা কাঁচা লঙ্কা দিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখুন পুরোপুরি ঠান্ডা হওয়া অব্দি ।Indian recipe regional specialities - আঞ্চলিক রেসিপি
অন্ধ্র প্রদেশে, হর্সগ্রাম বা উলাভালু জন্ডিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এবং ওজন কমানোর ডায়েটের অংশ । এটি আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে এবং শীত মৌসুমে শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে সহায়ক বলে মনে করা হয়। উলাভাচারু (হর্সগ্রাম স্যুপ) হল অন্ধ্র প্রদেশের একটি জনপ্রিয় খাবার, যেটি বেশিরভাগ তেলেগুভাষী লোকের বিয়ে এবং অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হয় এবং সিদ্ধ ভাতের সাথে এর স্বাদ অপূর্ব।
পানা সংক্রান্তি বা ছটুয়া সংক্রান্তি সৌর মাসের প্রথম দিনটিকে চিহ্নিত করতে পালন হয়। এই দিনে 'পানা' বা মিষ্টি পানীয় দিয়ে ভরা একটি ছোট পাত্র নীচে একটি গর্ত করে একটি তুলসী গাছে ঝুলানো হয়। পাত্র থেকে জল পড়া বৃষ্টিপাতের প্রতীক এবং এই সংক্রান্তি বর্ষাকাল এবং চাষের চক্রের সূচনা করে। উপকূলীয় উড়িষ্যার লোকেরা তুলসী গাছে অর্পণের পর আনুষ্ঠানিকভাবে কুলত্থ ময়দা [ছাতুয়া] খায়।
কেরালায় হর্শগ্রাম, মালায়ালামে মুথিরা, হালকা ভাজা হর্সগ্রাম বা মুথিরা আপেরি বা কোল্লু পোরিয়াল উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ঘরোয়া প্রতিকার হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
তামিলনাড়ুতে, হর্শগ্রামকে কোল্লু বলা হয়, দক্ষিণের জেলাগুলিতে এটিকে কানাম বলা হয়, সাধারণত তামিল খাবারে ব্যবহৃত হয় যার মধ্যে রয়েছে কোল্লু চাটনি, কোল্লু থোরান, কোল্লু পোরিয়াল, কোল্লু অ্যাভিয়াল, কোল্লু সাম্বার এবং কোল্লু রসম।
মহারাষ্ট্রে, এবং বিশেষ করে উপকূলীয় কোঙ্কন অঞ্চল এবং গোয়াতে কুলিথ প্রায়ই কুলিথ উসুয়াল, পিঠলা এবং লাড্ডু তৈরিতে ব্যবহার হয়। এটি কুলিতান সারু, কুলিতান উপকারি, কুলিতান ঘাসী (নারকেলের তরকারি তৈরি) এবং ইডলির মতো (কিন্তু ফার্মেন্টেড নয়) জনপ্রিয় খাবার তৈরি করতে ব্যবহৃত হয় যাকে কুলিতান সানন বলা হয়। কর্ণাটক রন্ধনপ্রণালীতে হুরালি সারু, কুলিথ বা হুরালি একটি প্রধান উপাদান। উসালী, চাটনি এবং বাসারুর মতো প্রস্তুতিতেও হুরালি ব্যবহার করা হয় ।
কর্ণাটকের দক্ষিণ কানারা অঞ্চলে, টুলুতে একে কুডু নামেও ডাকা হয়। উত্তর ভারতের পাহাড়ি অঞ্চলে গাহট বা কুলাথ একটি প্রধান উপাদান। হিমাচল প্রদেশে খিচড়ি তৈরিতে কুলাথ ব্যবহার করা হয়।
উত্তরাখণ্ডে, বেশিরভাগ কুমাওনিদের প্রিয় রাস প্রস্তুত করার জন্য এটি একটি গোল লোহার প্যানে রান্না করা হয়।
গাড়োয়াল অঞ্চলে একটি আঞ্চলিক থালি হল ফানু যা সরাসরি একটি কড়াইতে তৈরি করা হয় | যেটি মোটা করে হালকা পিষে নেওয়া গাহাত বা হর্সগ্রাম আগের রাতে ভিজিয়ে রেখে পরদিন কয়েক ঘন্টা ধরে সিদ্ধ করে একেবারে শেষের দিকে কিছু ছোট করে কাটা সবুজ শাক যেমন পালক বা পালংশাক, রাই, কচি মূলা পাতা, অথবা যদি আর কিছু না থাকে ধনে পাতা ওই রান্নায় দেওয়া হয় । ভাতের সাথে পরিবেশন করা হয় বা ঝাঙ্গোরা [একটি বাজরার মতো শস্য, যা এক দশক আগে দরিদ্র গাড়োয়ালিরা প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করত] অথবা শুধু আটার রুটির সাথেও খাওয়া হয় । ফানু হল একটি স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবার।
মায়ানমারে, সিদ্ধ করার পর শুকনো বীজ লবণ দিয়ে পিষে নেওয়া হয় এবং তারপর সয়াবিন থেকে সয়া সসের মতো সস তৈরি করতে গেঁজিয়ে নেওয়া হয় ।
ভাবপ্রকাশে বলা আছে কুলত্থ [কুলঠি, ডলিচোস বিফ্লোরাস, হর্সগ্রাম ] ঔষধি হিসাবে ব্যবহার করার কথা । নন্দীকেশ্বর নন্দীকেশ কাসিকায় উল্লেখিত উদ্ভিদের চারটি শ্রেণি রয়েছে - বনস্পতি, বৃক্ষ, ওষধি এবং বিরুধ। ফল ধারণকারী উদ্ভিদকে বনস্পতি বলা হয়। যাদের দৃশ্যমান ফুল ও ফল উভয়ই থাকে তাদেরকে বৃক্ষ বলে। ফল পাকার পর যারা মারা যায় তারা ওষধি এবং দুর্বল গাছপালা ও গুল্মকে বিরুধ বলে। সুশ্রুত সংহিতা থেকে এটা স্পষ্ট যে ঔষধি শব্দটি দ্বৈত অর্থে ব্যবহৃত হয়, যেমন, শস্য এবং সেইসাথে ওষুধ।
কুলোত্তোকলাই - কিছু রেফারেন্স
কুলত্থা কলাই হল ভারতে গরিব মানুষের ডাল এবং স্প্রাউট, কুলত্থ গুড়, কুলত্থ জুস্ এবং কুলত্থ ঘি খাওয়া হয়। বীজগুলি সাধারণত শুকিয়ে নিয়ে তারপর সেদ্ধ করা হয়।The perennial horsegram (Dolichos uniflorus) খাদ্য ও পশুখাদ্যের জন্য ভারতের একটি ভেষজ। হর্সগ্রামের আসল ল্যাটিন নাম ছিল ডলিচোস বিফ্লোরাস এবং হর্সগ্রামের সঠিক প্রতিশব্দ হল ম্যাক্রোটাইলোমা ইউনিফ্লোরাম যা সাধারণত মথ বিন নামে পরিচিত।
প্রতি 100 গ্রামে পুষ্টির মান
Horse gram is an excellent source of protein (17.9–25.3 %), carbohydrates (51.9–60.9 %), essential amino acids, energy, low content of lipid (0.58–2.06 %), iron (Bravo et al. 1999; Sodani et al. 2004), molybdenum (Bravo et al. 1999), phosphorus, iron and vitamins such as carotene, thiamine, riboflavin, niacin and vitamin C (Sodani et al. 2004).
Kulthi, Hurali, Madras gram, Muthenif, Rahitha, Culutu, hulage, kulithu, habulakulta, Kultha, Rarat, vulavalu, Gaheth, Botang, Kollu, Horse gram contains also possesses phyto agglutinin, globulin, psoralin and coumestrol in a considerable amount, though like in many other modern age commercially refined and processed food grains the content may be greatly reduced.
ref: https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC4397296/
এটি কিডনির পাথর দূর করতে সাহায্য করে। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও সাহায্য করে। হর্সগ্রামের ভেষজ ঔষধির জন্য বিখ্যাত কারণ গাছের বিভিন্ন অংশ হাঁপানি, মূত্রনালীর ব্যাধি এবং কিডনিতে পাথরের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। কুলথি ভিজিয়ে রাখার পরে অবশিষ্ট জল অন্ধ্রপ্রদেশে জন্ডিসের চিকিৎসায় ব্যবহার হয় । এটি হৃদরোগ, হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস, মূত্রত্যাগের রোগ এবং কিডনিতে পাথরের চিকিৎসায় সাহায্য করে। (Ghani 2003)
ref:https://www.researchgate.net/publication/330534133_Medicinal_and_Nutritional_Values_of_Macrotyloma_uniflorum_Lam_Verdc_Kulattha_A_Conceptual_Study
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে অপ্রক্রিয়াজাত কাঁচা বীজ শুধুমাত্র অ্যান্টি-হাইপারগ্লাইসেমিক বৈশিষ্ট্যই ধারণ করে না, এমন গুণাবলীও রয়েছে যা ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমায়। বিজ্ঞানীরা বীজ এবং তাদের স্প্রাউটগুলির মধ্যে একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ করেছেন এবং দেখেছেন যে বীজগুলি হাইপারগ্লাইসেমিক ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যের উপর আরও বেশি উপকারী প্রভাব ফেলবে। বেশিরভাগ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলি বীজের আবরণে সীমাবদ্ধ এবং এটি ফেলে দিলে কোনও ভাল কাজ করবে না। কাঁচা বীজ পলিফেনল, ফ্ল্যাভোনয়েড এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ একটা প্রধান অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। বীজের প্রোটিন-টাইরোসিন ফসফেটেস 1 বিটা এনজাইমকে বাধা দিয়ে কার্বোহাইড্রেট হজম কমিয়ে এবং ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে পোস্ট-প্র্যান্ডিয়াল হাইপারগ্লাইসেমিয়া কমানোর ক্ষমতা রয়েছে। এটি আয়রন এবং মলিবডেনামের একটি চমৎকার উৎস।
What we eat why we eat - কি খাই কেন খাই
একটা সময় ছিল যখন এখনকার তুলনায় স্বাস্থ্যগত সমস্যা বজায় রাখার জন্য শুধুমাত্র আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মানুষকে বোঝাতে হতো যেখানে আমাদের মনের মধ্যে একটি দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে উঠেছে যা আমাদের বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে যেকোনো কিছু এবং সবকিছুকে বোঝার ইচ্ছা - অনেক সময়ই বুঝে ও না-বুঝে আমরা শুধু "ওহ এটা ক্লিনিক্যালি প্রমাণিত" বলে সন্তুষ্টি অর্জন করি। আজ সেই কারণে জনসাধারণের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করার জন্যে ব্যবসায়িক বুদ্ধিতে বিজ্ঞাপনগুলোতে সব জিনিষকে এই পন্থায়ে লেখা হচ্ছে ।ভারতীয় জনসংখ্যার 70% থেকে 75% গ্রামীণ জনগণ বিভিন্ন কৃষি আবহাওয়ায় অবস্থিত প্রায় 5,76,000 গ্রামে বাস করে। গ্রামের মানুষের জন্যে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও বিভিন্ন ব্যবস্থা যেমন রয়েছে। তেমনই বেশিরভাগ সাধারণ অসুস্থতা বাড়িতে ঘরোয়া প্রতিকারের জন্যে শাকসবজি, বীজ, গাছের ছাল বাকল, মূল এবং মশলা যেমন মরিচ, আদা, হলুদ, ধনে, জিরা, তেঁতুল, মেথি, তুলসী ইত্যাদি এবং আরও জটিল ক্ষেত্রে কিছু প্রাণী বা খনিজ দিয়েও স্থানীয় রোগ এবং অসুস্থতা মোকাবেলা করার জন্য ব্যবহার করা হতো আর এখনো ঘরোয়া টোটকা হিসাবে করা হয় ।
হরসগ্রাম ঔষধি হিসাবে ব্যবহারের কথা লেখা আছে চরক ও সুশ্রুত সংহিতাতে [১-২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে]। এটিকে সংস্কৃতে কুলত্থ বলে । আচার্য চরক একে ডায়াফোরটিক হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করেছেন। বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক গ্রন্থে একে বিভিন্ন নামে ডাকা হয়েছে যেমন – তাম্র বীজ, স্তীরমূত্র, কালা বৃদ্ধ, কুলিত্থা, শ্বেতা বীজ, সিতারা, অনিলপাহা, খর্ষণ, পিতরমুদ্গা, আলিস্কন্ধ, সুরাশক, তাম্র বৃন্ত ইত্যাদি।
Doshic action: pacifier of vata pitta and kapha doshas.
- Lithotripsic [asmari bhedana]
- Lipolytic [medohara]
- Spermicidal [shukrahara]
- Burning [vidahi]
- Diuretic [mutrala]
- Eye tonic [chakshushya]
- Analgesic [shoola prasamana]
- Coolant [daha prashamana, on application]
- Laxative [bhedana]
- Sangrahi [absorbent]
- Healing [vrana ropana]
- Anti inflammatory [sotha hara]
- Diaphoretic [sweda karaka]
- Wormicidal [krimighna]
- Vata pacifier [vata hara]
বিভিন্ন বৈদিক প্রসঙ্গে কুলোত্তকলাই ফার্মাকোথেরাপিউটিক ব্যবহার বলা আছে | ওজন কমানোর জন্য এবং কাশি এবং ঠান্ডা ঘরোয়া আয়ুর্বেদিক প্রতিকার
- কুলোত্তকলাই : নরমভাবে সিদ্ধ, 25 গ্রাম। সকাল এবং সন্ধ্যায় খাওয়া । মশলা সহ পেঁয়াজ এবং কাঁচা লঙ্কা দিতে পারেন। এইটি খেলে শরীরে যে উত্তাপ হবে সেটা কমানোর জন্যে বাটার মিল্কে বাৰ্লি মিশিয়ে খাওয়া উচিত ।
- প্লাস্টিক ছাড়া অন্য পাত্রে মাটিতে পৌঁছানোর আগে বৃষ্টির জল সংগ্রহ করুন এবং জলটা ছেঁকে আধা গ্লাস বৃষ্টির জলে 1/4 চা চামচ ভাল হলুদ গুঁড়ো যোগ করুন এবং সকালে পান করুন। এক ঘন্টা খাবার গ্রহণ করবেন না।
- ওজন কমানোর জন্য রাতে যা খেতে হবে: পুরানো চাল, জোয়ার, পুরানো গম, মুগ ডাল, কুলোত্তকলাই, যবের বীজ সমান অনুপাতে নিন। সারারাত ভিজিয়ে রাখুন, সকালে শুকিয়ে নিন। শুকনো গরম প্যানে অল্প অল্প করে ভেজে নিন। পরে গুঁড়া করে সংরক্ষণ করুন। রুটি তৈরি করুন এবং রাতে খাবার হিসাবে নিন।
- কুলোত্তকলাই ধুয়ে পরিষ্কার করে আগের দিন ভিজিয়ে রেখে পরের দিন একই জল দিয়ে ভালো করে রান্না করতে হবে। সঠিকভাবে রান্না হলে লবণ, গুড়, গোলমরিচের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে মেশান। 5 মিলি ঘিতে নারকেলের কুচি, শেষে কারি পাতা, হিং এবং জিরার বীজ মেশান। এটি গরম গরম পরিবেশন করা হয়। এটি অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর। দীর্ঘস্থায়ী সর্দি, কাশি, প্রস্রাবের ব্যাধি ইত্যাদিতে এই খাবারটি ভালো।
- রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস -কুলোত্তকলাই জুস্ এবং ভাজা কুলোত্তকলাই গুঁড়া শরীরে মালিশ করা হয়।
- দীর্ঘস্থায়ী কাশি - কুলোত্তকলাই ঘি চেটে খাবার জন্যে দেওয়া হয় ।
- ইউরিনারি ক্যালকুলি - কুলোত্তকলাই থেকে প্রস্তুত ঘি খাওয়ানো হয় ।
- Amenorrhea/ dysmenorrhoea - কুলোত্তকলাই ক্বাথে হিং দিয়ে খাওয়ানো হয় ।
- Utricaria - শুকনো মূল এবং কুলোত্তকলাই স্যুপ দেওয়া হয়।